প্রতিপক্ষ প্রার্থীর মৃত্যু ও করোনার প্রভাবে পিছিয়ে পড়া চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচন এখন কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র। আগামীকাল ১০ অক্টোবর পৌরবাসী তাঁদের স্বপ্নের পৌরসভা বিনির্মানে ভোট দিবে, সন্ধ্যা পেরুলেই ভোট যুদ্ধে জয়ীর নামের পাশে বসবে- মেয়র, চাঁদপুর পৌরসভা।
প্রথমবারের মতো চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচন হচ্ছে দলীয় প্রতিকে। তৃণমূলের অগাধ আস্থার প্রতিদান হিসেবে দেশরত্ন শেখ হাসিনা নৌকা তুলে দিয়েছেন তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট জিল্লুর রহমান জুয়েল ভাইয়ের হাতে। যিনি তাঁর তারুণ্য দীপ্ত যৌবনে উত্তাপ ছড়িয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্ত্বর থেকে রাজপথে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হয়ে লড়াই-সংগ্রামে মৌলবাদী জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ছিলেন অগ্রগামী হয়ে। ন্যায়-অন্যায়ের প্রশ্নে তিনি যেমন প্রতিবাদের স্টেনগান হাতে লড়তে জানেন, মানবিকতার প্রশ্নে সেই তিনি হাতে বকুলের মালা তুলে নেন।
মহামারী করোনাভাইরাসের নাকাল সময়ে চাঁদপুর পৌরসভার মানুষের দ্বারেদ্বারে তিনি ঘুরেছেন, নিজ হাতে পৌঁছে দিয়েছেন মানবিক উপহার। গঠন করেছেন কুইক রেসপন্স টিম (QRC), তারুণ্যকে সাথে নিয়ে করোনার বিরুদ্ধে মানুষের জন্য লড়েছেন। লাশ দাফন থেকে শুরু করে QRC’র মাধ্যমে সাধ্যের সবটুকু উজার করে দিয়ে পাশে ছিলেন মানুষের।
তিনি প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে জড়িয়ে ধরেন ভ্রাতৃত্বের টানে। প্রভাব বিস্তারের বদলে ধানের শীষ প্রার্থী’কে যেনো বিব্রত না হতে হয়, সেজন্য বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে নিজ হাতে নৌকার ব্যানার সড়িয়েছেন। আমাদের মানবিক ও ডায়নামিক মেয়র প্রার্থী জিল্লুর রহমান জুয়েল ভাই তাঁর প্রতিটি নির্বাচনী বক্তব্যে বলেছেন- “আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমি দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করছি। তবে আমি যদি মেয়র নির্বাচিত হতে পারি, আমি কোনো দলীও মেয়র হবে না। আমি পৌর বাসীর সবার মেয়র হবো।”
নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতেই প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিরুদ্ধে বক্তব্য’র চিরাচরিত সংস্কৃতির বদলে নৌকার দক্ষ মাঝি জিল্লুর রহমান জুয়েল ভাই জানিয়েছেন- “আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার বক্তব্যে প্রতিপক্ষ প্রার্থী সম্পর্কে একটা কথাও বলবো না। আমি কোন ভাল-মন্দ কিছুই বলবো না। বলার অনেক কিছুই আছে, কিন্তু কিছুই বলবো না। আমি আমার ব্যাপারে বলবো, আমি আমাকে উপস্থাপন করব।”
চাঁদপুর পৌরবাসী দেখেছে, তিনি তাঁর কথা রেখেছেন। নিজের নির্বাচনী ব্যানার ও পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলার একাধিক অভিযোগ ও প্রমাণ থাকা স্বত্বেও সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে তিনি কোন ধরনের পদক্ষেপ নেননি। তিনি বরং আরও বেশী মিশে গেছেন গণমানুষের সাথে, নিজেকে নিয়ে গেছেন জনগণের কাছে। যেখানেই গিয়েছেন, জনতার ঢল নেমেছে। জনস্রোতে পথসভা হয়ে গেছে জনসভা, মানুষের উপস্থিতিতে কখনো কখনো সেটি হয়ে গেছে মহাসমাবেশ। কারণ তিনি বারেবারে বলেছেন- “স্যুট টাই পড়া ভদ্রলোক যদি আমার সামনে চা খেতে খেতে তাদের সমস্যার কথা বলতে পারে, তাহলে একজন রিকশাওয়ালা ভাই ও আমার অসহায় মা-বোনরা আমার সামনে চেয়ারে বসে আমার দেয়া চা খেতে খেতে তাদের সমস্যার কথা বলতে পারবেন।”
রাত পোহালেই চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচন, প্রচলিত হিসেবে আমরা এটিকে নগর পিতা কিংবা পৌর পিতা নির্বাচন বলেই উল্লেখ করে থাকি। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকার মাঝি জিল্লুর রহমান জুয়েল ভাইয়ের ভাষায়- এটি নগর সেবক নির্বাচন! ইতিমধ্যে তাঁর চলনে-বলনে, বক্তব্যে অসংখ্য বার উচ্চারণ করেছেন, তিনি জনগণের সেবক হতে চান। আমি নিশ্চিত ১০ অক্টোবর ঐতিহ্য, বানিজ্য ও পর্যটন নির্ভর নান্দনিক চাঁদপুর গড়ার লক্ষ্যে পৌরবাসী তাদের সেবক নির্বাচন করতে ভুল করবেন না। মেঘনা পাড়ের মানুষেরা ‘কথা দিয়ে কথা রাখা’ মানুষটাকে জয়ী করতে ভুল করবেন না। এখন শুধু সময়ের আপেক্ষা…
লেখক-
তানভীর হোসেন জনী,
সহ-সভাপতি (সাবেক), চাঁদপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ছাত্রলীগ
গ্রন্থণা ও প্রকাশনা সম্পাদক (সাবেক), কচুয়া উপজেলা ছাত্রলীগ