বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পরছে প্রচুর পরিমাণে রুপালী ইলিশ। আর সেই ইলিশ ট্রলার বোঝাই করে একের পার এক আসছে আড়ৎ ঘাটে। চলতি বছরে সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরানি নিষিদ্ধ ছিল।

গত ২৩ জুলাই এ সময়সীমা শেষ হয়েছে। করোনার কারণে ওইসময়টা জেলেরা কর্মহীন হয়ে পড়েন। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর আবহাওয়া খারাপ থাকার কারনে জেলেদের জালে তেমন ইলিশ ধরা পড়ছিল না। তবে সপ্তাহ জুড়ে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এর ফলে দেশের বৃহত্তম মৎস বন্দর মহিপুর-আলীপুরে এখন উৎসব মূখর পরিবেশ বিরাজ করছে। এদিকে স্থানীয় বরফ কলগুলোও চাহিদা অনুযায়ী বরফ সাপলাই দিতে পাড়ছেনা কেউ কেউ বরফ মজুদ করে তিনগুণ দামে বরফ বিক্রি করছে। এছাড়াও চড়া দামে অন্য এলাকা থেকে বরফ কিনে আনতে হচ্ছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ট্রলার থেকে ঝুড়ি ভর্তি করে শ্রমিকেরা ইলিশ এনে আড়তে ফেলছেন। একদিকে চলে মাপঝোপ। আর অন্যদিকে চলে দরদাম। পাইকারি ক্রেতারা দরদাম শেষে ইলিশ বরফ দিয়ে সারিসারি ককসেট রাখেন। আর সেই ককসেট বোঝাই ইলিশ ট্রাক ও অন্যান্য গণপরিবহনের ছাদে করে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।

তবে দীর্ঘদিন পর সাগরে প্রচুর ইলিশ
ধরা পড়লেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেনা জেলেরা এমটাই বলেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। কারণ বরফের দাম বৃদ্ধি ফলে মাছ সুরক্ষা রাখা যাচ্ছে না।

জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনার প্রভাব ও সাগরে মাছ ধরার ওপর
নিষেধাজ্ঞার পর জেলেদের জালে তেমন মাছ মিলছিলো না। তবে এখন প্রচুর ইলিশ
ধরা পড়ছে। মাছগুলো আকারেও বড়। তাই জেলেরা অনেক খুশি।

জেলে ফারুক মাঝি জানান, এমনিতেই ধারদেনা ও মহাজনদের কাছ থেকে আগাম দাদন নিয়ে সাগরে নামতে হয়েছে। এতদিন তেমন ইলিশ ধরা না পড়ায় তারা দেনা পরিশোধ নিয়ে চিন্তায় ছিলেন। এই পূর্ণিমার পর গভীর সাগরে নির্দিষ্ট কিছু পয়েন্টে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আরও ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করছেন তিনি।

মৎস বন্দর মহিপুরের মেঘলা আড়ৎ এর জামাল হোসেন বলেন, যে হারে সাগরে মাছ পড়ছে সেই অনুপাতে বরফ সাপলাই দিতে পারছেনা এখানকার বরফ কলগুলো। তাই চড়া দামে বরফ আনতে হচ্ছে খুলনা বরিশাল, পটুয়াখালী ও বরগুনা থেকে।এছাড়া বেশ কয়েক দিন ধরে সাগরে ইলিশ পড়তে শুরু করেছে। তবে দীর্ঘদিন পর প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও পাইকারি বাজারে মাছের দাম কম। কারণ মাছ সুরক্ষা রাখার জন্য বরফের প্রয়োজন। এজন্য অনেক আড়তদার মাছ কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন প্রায়।

মহিপুর মৎষ্য আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি ফজলু গাজী বলেন, হঠাৎ করে সাগরে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। করোনার কারণে রপ্তানি না থাকায় ইলিশের দাম একটু কম। এখন যে ইলিশ
১৭/১৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই মাছ গত বছর দাম ছিল মণ প্রতি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু বরফ বিষয়ে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিলেই মাছের সুরক্ষার পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। জেলেরা উপকৃত হবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।