গ্রীক পৌরাণিকে আমরা ফিনিক্স পাখির কথা শুনতে পাই। ফিনিক্স পাখি নিজের পুড়ে যাওয়া ছাই থেকেই আবার জন্মায়, যার পালকে থেকেও জন্মায় অজস্র নতুন পাখি… শেখ হাসিনা আমাদের রূপকথার সেই ফিনিক্স পাখির বাস্তব রূপ। খুনীদের রক্তের হলি খেলা থেকে যিনি জন্মেছেন বারবার, যার অসীম সাহসের কাছে নতজানু হয়েছে বহু বিশ্ব মোড়ল।

দেশী ও বিদেশী খুনিদের হাতে গোটা পরিবার নির্মমভাবে খুন হওয়ার পরও দেশমাতৃকার টানে শেখ হাসিনা ছুটে এসেছেন বাংলাদেশে। এ দেশের আকাশে-বাতাসে তখন শ্লোগান উঠেছে- শেখ হাসিনা ভয় না, আমরা আছি লাখো ভাই।

দেশে ফিরেই শেখ হাসিনা অধিকার আদায়ের মশাল হাতে নিলেন, মিটমিট করে জ্বলতে থাকা এদেশের মানুষের স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হলেন। খুনি চক্র তখনও সক্রিয়, শত্রুর গ্রেনেড আর বুলেটের সামনে থেকে শেখ হাসিনা বেঁচে ফিরেছেন ঊনিশ বার। তবুও মৃত্যুকে তিনি পরোয়া না করে অবিচল থেকেছেন এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে।

এই দেশ বন্দুকের নলে ক্ষমতায় আসা একাধিক ‘স্যার’ খ্যাত স্বৈরশাসকের নিপীড়ন দেখেছে। জলপাই রঙের জামা পরা তেমনই এক স্বৈরশাসকের হাত ধরে এই দেশে রাষ্ট্র পরিচালক হয়েছিলেন এমন একজন, যাকে সম্বোধনে ‘ম্যাডাম’ ডাকতে হয়। অথচ বাঙালী জাতি বরাবরই আন্তরিকতা আর ভালোবাসা পেলে নুইয়ে পড়েছে, খটখটে ‘স্যার’, ‘ম্যাডাম’ ডাকে বড্ড অনভ্যস্ত এই তল্লাটের তামাটে রঙের মানুষেরা। এই বঙ্গের মানুষেরা একটা বুক খুঁজেছে, যে পরম মমতায় দ্বিধাহীন ভাবে জড়িয়ে নেবে তাদের।

আর তাইতো আশ্রয় হিসেবে শেখ হাসিনার আঁচলের ছায়াতলে বাঙালী অনুভব করে- শান্তিতে আছি। বঙ্গবন্ধুকে লোকে ‘মুজিব ভাই’ ডাকতো, বাবার মত তাকেও ভালোবেসে ‘আপা’ ডাকে। হাসু আপা- কেমন অদ্ভুত একটা আদুরে মায়া আছে এখানে। আর চলনে-বলনে, শিশুসুলভ সুন্দর মনের আচার-আচরণে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পরিচয় ছাপিয়ে হয়ে উঠেছেন, বাঙালীর আপা। এ ডাকে কোন বাধ্যবাধকতা কিংবা প্রটোকলের বালাই নেই, আছে শুধুই ভালোবাসা। মায়াভরা ভালোবাসা।

শেখ হাসিনা, বাংলার ফিনিক্স পাখি! 3

শেখ হাসিনার দুচোখ ভরা স্বপ্ন, বাংলাদেশের জন্য। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে আলোর বেগে ছুটছে। চাষাভুষা এদেশের মানুষকে তিনি করেছেন তথ্যপ্রযুক্তিতে উন্নত। তারুণ্যেকে করে তুলেছেন আরও আধুনিক, বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খরস্রোতা নদী পদ্মায় বসিয়েছেন স্বপ্নের পিলার।

মেঘে-মেঘে অনেক বেলা গড়িয়েছে, বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য জীবনকে হাতের মুঠোয় রেখে ৭৪ তম জন্মদিনে পা রেখেছেন শেখ হাসিনা। তবুও আমি এটিকে উল্টো করে বারবার ‘৪৭’ পড়ি। বঙ্গবন্ধুকে দেখা হয়নি আমার, এ আজন্ম আক্ষেপ গোছাতে আপনাকে যে আরও কতক দশক দেখতে চাই। ‘আপা’ বলে ডাকতে চাই। শেখ হাসিনা আমাদের আলোকের ঝর্নাধারা, আমাদের শেষ আশা। আর এ দেশের মানুষও যে প্রবল ভাবে বিশ্বাস করে- ‘যতদিন শেখ হাসিনার হাতে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ’। আপনি বাঁচুন আরও অনেকগুলো বছর।

শুভ জন্মদিন বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া আমানত, আমাদের আশার বাতিঘর, সবশেষ শ্রেষ্ঠ ভরসা, আগুন থেকে উঠে আসা বাংলার ফিনিক্স পাখি- দেশরত্ন শেখ হাসিনা। জন্মদিনে আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

লিখেছেন-

তানভীর হোসেন জনী
সহ-সভাপতি (সাবেক), চাঁদপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ছাত্রলীগ,
গ্রন্থণা ও প্রকাশনা সম্পাদক (সাবেক), কচুয়া উপজেলা ছাত্রলীগ