গত সোমবার ৩১শে আগস্ট বিকালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এ্যভিনিউস্থ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাকক্ষে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

সভায় সংগঠনটির সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘দেশপ্রেমের অগ্নি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, চেতনা, আন্দোলন ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে শক্তি, সাহস ও প্রেরণা যুগিয়েছে বঙ্গবন্ধুকে। বঙ্গবন্ধুর কারাগারে থাকাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংকট দেখা দিলে বঙ্গমাতা পর্দার অন্তরালে থেকে দৃঢ়, কৌশলী এবং বলিষ্ঠ ভূমিকার মাধ্যমে সংগঠনের জন্য কাজ করতেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের পুরো নয়টি মাস অসীম সাহস, দৃঢ় মনোবল ও ধৈর্য নিয়ে বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কঠিন দিনগুলোর মোকাবিলা করেছেন। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ও ২৩ মার্চের পতাকা উত্তোলনে বঙ্গবন্ধুর প্রধান পরামর্শক হিসেবে ছিলেন বঙ্গমাতা। বঙ্গমাতার প্রেরণা থেকে রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু সূর্য্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে শুনিয়েছিলেন স্বাধীনতার অমোঘ মন্ত্র- “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”

তিনি বলেন, ‘চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ, প্রেরণায় বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করে জয় বাংলা স্লোগানে স্পন্দিত বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য তনয়া দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় উদ্দীপ্ত হয়েছে। তাঁর রক্তের উত্তরাধিকারবাহী সুযোগ্য কন্যা, বাংলাদেশের উন্নতি আর প্রগতির স্বপ্নসারথি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় এবং সাহসী সিদ্ধান্তে বাংলার মাটিতে একাত্তরের মানবতাবিরোধীদের বিচার হয়েছে।’

লেখক ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি শোকের মাসে প্রত্যয় ও শপথে শোককে শক্তিতে পরিণত করার অভয়মন্ত্রে উদ্দীপিত হবে বাঙালি। সেই শক্তিতেই আমরা বিশ্বমঞ্চে বাঙালি জাতি হিসেবে শির উঁচু করে দাঁড়াবো। বিশ্ব চিনবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলাদেশ। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন মুজিব আদর্শে শাণিত থাকবে বাংলার আকাশ-বাতাস জল-সমতল। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশী চেতনা ও আদর্শও চিরপ্রবাহমান থাকবে।’

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ছাত্রলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা মুজিববাদ পাঠ করবে, ছড়িয়ে দিবে দেশ থেকে দেশান্তরে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। ধারণ করবে রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনে। আমরা সেদিনের স্বপ্ন দেখি যেদিন সারা বিশ্বের শোষিত নিপীড়িত, মুক্তির নেশায় মানুষের মিছিলে বঙ্গবন্ধু ফিরে আসবে প্ল্যাকার্ডে, স্লোগানে।’

তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়, মুক্তিযু্দ্ধের প্রাক্কালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এক তর্জনীর ইশারায় যেমন ৩০ লক্ষ শহীদ এবং ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা পেয়েছিলাম এই বাংলাদেশের স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতাকে বাংলাদেশের মাটিতে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ এখন ৫০ লক্ষ নেতাকর্মী দিন-রাত প্রস্তুত রয়েছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার এক তর্জনীর ইশারায় আমরা তাৎক্ষণিক একসাথে হয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনার সকল ধরনের নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করবো।’

এসময় বিশেষ অতিধির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।