গত সোমবার রাজশাহীর গণপূর্ত কার্যালয়ে প্রকৌশলীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন স্থানীয় ঠিকাদার ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। প্রকৌশলীকে মারধরসহ অফিস কক্ষে আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন দূরবিত্তরা। আহত প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন (২৮) রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ কার্যালয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী।
বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
হামলার শিকার উপ-সহকারী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন জানান, কোটি টাকার বরাদ্দ রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় ভূমি অফিস নির্মাণকাজ চলছে। রোববার বিকেলে তিনি এ নির্মাণকাজ পরিদর্শনে যান। এ সময় সেখানে নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে ঢালাই কাজ চলছিল। এ ছাড়া কাজের সিডিউলে চার ইঞ্চি ঢালাই দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও দেওয়া হচ্ছিল আড়াই ইঞ্চি। এ সময় তিনি কাজটি বন্ধ করে দেন এবং ঘটনাস্থল থেকে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। এ ঘটনার জের ধরে ঠিকাদার লিটন এবং তার ব্যবস্থাপক আতিক সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তার অফিস কক্ষে আসেন। তারপর লিটন ঘটনাস্থল থেকে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নিতে অস্বীকার করেষ। একপর্যায়ে লিটন এবং তার সহযোগী তার ওপর হামলা চালান।
প্রকৌশলী অভিযোগ, এ সময় লিটন কাঠের চেয়ার দিয়ে তাকে বেধড়ক পেটান। ফলে তার ডান চোখের ওপরের অংশে আঘাত লেগে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে গুরুতর আঘাত রয়েছে। হামলার পর লিটন এবং তার সহযোগী আতিক ব্যাপক ভাঙচুর চালান। তার কক্ষের চেয়ার, টেবিল, ল্যাপটপ এবং প্রিন্টার ভেঙে ফেলেন।
গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফেরদৌস শাহনেওয়াজ কান্তা বলেন, ঠিকাদার লিটন এবং তার সহযোগী আতিক প্রকৌশলী দেলোয়ারকে মারধর এবং তার কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ এবং র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইফতেখায়ের আলম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন দূরবিত্তদের বিরুদ্ধে।
নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি শাহাদৎ হোসেন জানান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মারধরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লিটন এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহাবুল মঞ্জুর লিটন (৩১) এবং তার ব্যবস্থাপক আতিকুর রহমানকে (৩২) আটক করেন। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বর্তমানে এই ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তোলপাড় শুরু হয়েছে। যাদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারি পড়ুয়া শিক্ষার্থীই বেশি। তারা এই ঘটনা নিন্দা জানিয়ে ফেসবুক ওয়ালে দিয়ে যাচ্ছেন আবেগঘন স্ট্যাটাস।