শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্প

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে গোটা বিশ্বেই। বাসস্থান হারিয়ে উদ্বাস্ত হচ্ছে বহু পরিবার। বাংলাদেশের এমন পরিবারগুলোকে ‘শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্প’র মাধ্যমে ফ্ল্যাট দিবে সরকার। দেশতো বটেই উদ্বাস্তু হওয়া মানুষের জন্য, বিশ্বের সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণকেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে কক্সবাজারে। এখন অপেক্ষা কেবল উদ্বোধনের।

কাজ শেষ হয়েছে ‘শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্প’র প্রথম পর্যায়ে ১৯টি পাঁচতলা ভবনের। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাথমিকভাবে ৬শ’ পরিবার ঠাঁই পাবেন এসব সুদৃশ্য অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে। শুধু আবাস নয়, এখানে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোর স্থায়ী পুনর্বাসন ও আর্থিক সচ্ছলতা আনতেও, কর্মসূচি হাতে নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাঁচতলা বিশিষ্ট প্রত্যেকটি ভবনে বাস করবে ৩২ পরিবার। থাকছে উপাসনালয়, স্কুলসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধাও।

কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের বাঁকখালী নদীর তীর ঘেঁষা এলাকায় তৈরি হওয়া এ প্রকল্পের ফ্ল্যাট হস্তান্তর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন শেষে উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে ফ্ল্যাটের চাবি। এরই মধ্যে উদ্বোধনের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আফসার।

১৯৯১ সালে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের পর ভিটে মাটি হারানো মানুষদের বসবাস কক্সবাজার সদরের এয়ারপোর্ট সংলগ্ন কুতুবদিয়া পাড়ায়। দুর্যোগ থেকে বাঁচতে জায়গাটিতে আশ্রয় নিলেও দুর্ভোগ এখনো নিত্যসঙ্গী এসব মানুষের। নবনির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পে নিজেদের স্থায়ী ঠাঁই হওয়ার খবরে নতুন স্বপ্ন দেখছেন বাস্তুহারা ভুক্তভোগীরা। তারা বলেন, এখানে পানির মধ্য থাকি। ওখানে গেলে আমাদের অনেক সুবিধা হবে। অনেক সুবিধা পাবো।

১ হাজার ৮শ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫৩ একর জমিতে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পটি গড়ে তুলেছে সরকার। যেখানে পাঁচতলা বিশিষ্ট ১৯টি ভবন এখন প্রস্তুত। প্রথমভাগে ৬শ’ পরিবার এবং পরবর্তীতে ১শ ৩৯ টি ভবন নির্মিত হলে এখানে বাস করবেন সাড়ে চার হাজারের বেশি পরিবার। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তদারকিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্প
প্রথমভাগের পাঁচতলা বিশিষ্ট এমন ১৯টি ভবন প্রস্তুত, যাতে থাকবে ৬শ’ পরিবার।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারি পরিবারের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে স্কুল, স্বাস্থ্য সেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক, বিনোদনের জন্য পার্ক থাকবে। পাশাপাশি প্রকল্প এলাকায় আশ্রয় পাওয়া মৎস্যজীবীদের কর্মসংস্থানের জন্য স্থাপত্যশৈলী ও আধুনিক নগরায়ন পরিকল্পনায় নির্মিত হবে একটি শুটকি পল্লী। খুরুশকূল অশ্রয়ণ প্রকল্পটিকে মূল শহরের সঙ্গে সংযোগের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে ব্রিজ ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যা পর্যটকদের আকর্ষণ করবে।

সেনাবাহিনীর মেজর জেলারেল মাঈন উল্লাহ চৌধুরী বলেন, এটি একটি লো লাইন এলাকা ছিল। এটাকে পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও প্রকল্প পরিচালকের দাবি, স্থায়ী নিবাসের পাশাপাশি টেকসই কর্মসংস্থান হবে বাসিন্দাদের। বাড়বে পর্যটকদের আনাগোনা। প্রকল্প পরিচালক মাহবুব হোসেন জানান, উনাদের বেশিরভাগই হলো মৎস্যজীবী। তাদের সবাইকে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

আরও পড়ুন-