মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) ভোর ৪টার দিকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি শফিউল বারী বাবু। আজ বাবুর বাসায় গিয়ে তার স্ত্রী-সন্তানদের সান্ত্বনা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তিনি মন্তব্য করেন, বাবুর এভাবে মৃত্যু স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আরেকটা সত্য উদঘাটিত করেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে শাইনপুকুর অ্যাপার্টমেন্টের বাসায় গিয়ে তার স্ত্রী বিথীকা বিনতে হোসাইনের সঙ্গে কথা বলে সমবেদনা জানান বিএনপি মহাসচিব। এ সময় বাবুর ছোট দুই ছেলেমেয়ে ফাতেমা বারী তুহিন ও আয়হান বারী সাঈদকে কাছে নিয়ে আদর করেন মির্জা ফখরুল।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাবুর (শফিউল বারী বাবু) এভাবে মৃত্যু আরেকটা সত্য উদ্ঘাটিত করেছে যে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারেই ভঙ্গুর। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি যে মানুষ আস্থা রাখতে পারে না- বাবুর অসুস্থতা, তার চলে যাওয়া এটাই প্রমাণ করে।

শফিউল বারী বাবুকে ‘মেধাবী’ নেতা হিসেবে অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, তার মতো একজন জনপ্রিয়, সচেতন রাজনৈতিক নেতা এভাবে চলে যাবে এটা আমরা কল্পনাই করতে পারিনি। তার অল্প সময়ের জীবনের ক্যারিয়ার বর্ণাঢ্য। তাকে শুধু বিএনপির জন্য নয়, তাকে দেশের মানুষের জন্য প্রয়োজন ছিল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাবু এদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে একটা ব্যতিক্রম। তার স্ত্রীর সঙ্গে বলছিলাম- দুটি বাচ্চা রেখে গেছে। মাথা গুজার ঠাঁইটুকু নাই। এখনো ভাড়া বাসায় থাকেন। এখন পরিবারটিকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। সবার কাছে আমার একটাই অনুরোধ থাকবে- তার পরিবার, স্ত্রী-সন্তানদের আমাদের নিজেদের মানুষ মনে করে যেন এগিয়ে আসি এবং সহযোগিতার হাত বাড়াই।

পড়ুনচিরনিদ্রায় শায়িত হলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি বারী

তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আমাকে বলেছেন- ‘বাবুর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেন যে- আমরা তার সঙ্গে আছি।’ আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও বলেছেন যে- ‘বলবেন আমি আছি তার সঙ্গে। আমরা সবাই তার সঙ্গে আছি। এই লড়াই শুধু তার স্ত্রী একা লড়বেন না, তার সঙ্গে আমরাও লড়ব।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আল্লাহতায়ালা বাবুকে বেহেশত নসিব করুক। তার স্ত্রী ও সন্তানদের এই শোক সহ্য করবার ক্ষমতা দিক। বাবু চলে যাওয়ায় আমাদের দলের নেতাকর্মীরা যেভাবে ভেঙে পড়েছে আল্লাহ তাদের শোক সইবার শক্তি দিক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, গোলাম সারোয়ার, ইয়াসীন আলী, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, শফিউল বারী বাবু বেশ কিছুদিন ধরে ফুসফুসে সংক্রমণজনিত রোগে ভুগছিলেন। এর ফলে তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। সোমবার হঠাৎ করে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে দ্রুত তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে রাত ২টার দিকে তাকে এভার কেয়ার (সাবেক এ্যাপোলো) হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন-