বিদ্যানন্দ (এক টাকার আহার) সেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতি আমার মুগ্ধতার কমতি ছিল নেই, এখন মুগ্ধতার সাথে দিনকেদিন যুক্ত হচ্ছে কৃতজ্ঞতা। করোনাভাইরাসে নিজেদের মানবিক কাজের মাধ্যমে সারাদেশে অসম্ভব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই দাতব্য সংস্থাটি। সম্প্রতি করোনা রোগীদের আইসোলেশন সুবিধা সহ চট্টগ্রামে ‘সিএমপি বিদ্যানন্দ ফিল্ড হাসপাতাল’ তৈরি করেছে সংগঠনটি। সেখানে ভর্তি হয়েছেন রাস্তায় সন্তান জন্ম দেয়া একজন পাগল। সে সন্তানের আকিকা দিয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীরা।
‘পাগলী মা হয়েছে, বাবা হয়নি কেউ’- শিরোনামে দিন কয়েক আগে বিষয়টি ফেসবুকে জানায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। পোস্টে বিদ্যানন্দ জানায়, “মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েটি রাস্তার পাশেই সন্তান প্রসব করেন। সদ্য ভূমিষ্ঠকে বাঁচাতে সাহায্য চেয়ে রাস্তায় সন্তান কোলে দৌড়াতে থাকেন জন্মদাত্রী। প্রচুর রক্তক্ষরণ দেখে স্থানীয় তরুণরা নিয়ে আসেন সিএমপি-বিদ্যানন্দ ফিল্ড হাসপাতালে।”
রাস্তায় জন্ম হওয়া সে শিশুটির জন্য উপহার পাঠায় অনেকে। শিশুটিকে আদর দিয়ে বড় করে তোলার দায়িত্ব নেন স্বেচ্ছাসেবকরা। বিদ্যানন্দ জানায়, “খাসি জবাই করে আকিকা দেয়ার পরিকল্পনা করছে তাঁরা। স্বেচ্ছাসেবকরা রাজার কন্যা হিসেবেই গড়ে তুলবে এই শিশুটিকে। রাস্তায় প্রসব হওয়া শিশুটির পিতা নেই, মা মানসিক প্রতিবন্ধী। সে দোষে কি তবে কন্যার আকিকা হবে না, জন্মের উৎসব হবে না? অবশ্যই হবে। স্বেচ্ছাসেবকরা খাসী জবাই করে আকিকা দিয়েছে; কন্যার নাম দিয়েছে চঞ্চলা চৌধুরী।”



চঞ্চলা চৌধুরী নাম দেয়ার পেছেনের কারণ জানিয়ে বিদ্যানন্দ বলেছে, “আমাদের মনে অনেক নামই এসেছে। কিন্তু শিশুটিকে যে জন্মদাত্রী এই পৃথিবীতে এনেছে তাঁর চিহ্ন আমরা রাখতে চেয়েছি নামে। মায়ের নাম-পরিচয় জানি না, পছন্দ চিনি না। তাই মায়ের চঞ্চল আচরণের সাথে মিলিয়ে এই নাম নির্বাচন করেছি।”
শিশু চঞ্চলা চৌধুরীর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মায়ের চিকিৎসার জন্যও উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। বিদ্যানন্দের বিশ্বাস, তিনি একদিন স্বাভাবিক বুদ্ধি লাভ করবেন। সেদিন সন্তানের নামে নিজের চিহ্নের মাঝে বুঝে নিবেন। আর বিদ্যানন্দ’কে ভালোবাসা মানুষের বিশ্বাস, জয় হবে বিদ্যানন্দের।
আরও পড়ুন-
- করোনা রোগী সেবায় প্রস্তুত বিদ্যানন্দের ‘ফিল্ড হাসপাতাল’
- এবার ‘ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক’তে বিদ্যানন্দ!
- মুগ্ধতার সাথে ‘বিদ্যানন্দ’র এবার কৃতজ্ঞতাও প্রাপ্য!