মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতি ও উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বার নির্দেশনা দিয়েছে, যেন রাজনৈতিক নেতারা জনগণের পাশে থাকে। কিন্তু সমালোচিত হয়েছেন অনেক জনপ্রতিনিধি। ত্রাণ সামগ্রী আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ উঠেছে অনেকের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে এমন জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে। এমন সমালোচনার মধ্যেও অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে ময়দানে করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নিবেদিত কর্মী হিসেবে নিরলসভাবে কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দেশের মানুষ এদের ভালবাসায় সিক্ত হয়েছেন। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে এমন আলোচিত জনপ্রতিনিধি বা রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গের মধ্যে ১২জন রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে এই প্রতিবেদন। এছাড়া দেশের ক্রান্তিলগ্নে সম্মুখভাগে যে জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে এসেছেন তাদের নিয়ে আমাদের ‘জনতার মুখ’ এর ধারাবাহিক প্রতিবেদন অব্যহত থাকবে…।
তোফায়েল আহমেদ এমপি
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রথম থেকে নিজের নির্বাচনী এলাকায় উপস্থিত থেকে এলাকার সাধারণ মানুষের দুঃখ দুর্দশায় পাশে ছিলেন তোফায়েল আহমেদ এমপি। তিনি বার বার এলাকার সাধারণ অসহায় মানুষের জন্য খাবার পাঠিয়েছেন এবং নিজ উদ্যোগে দুঃস্থদের তালিকা তৈরি করে নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করেছেন। শুধু দুঃস্থ নয়, মধ্যবিত্ত ও যারা অভাবগ্রস্ত তাদেরও সহযোগিতা করেছেন তোফায়েল আহমেদ। তিনি সব সময় এলাকার মানুষের পাশে ছিলেন এই করোনার দুর্যোগময় মুহূর্তে।



মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম)
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের দ্বিতীয় সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সহকারী সমন্বয়ক তিনি। মহামারী করোনা ভাইরাসের শুরু থেকেই তিনি অসহায়-কর্মহীন মানুষদের সাহায্য করে যাচ্ছেন। চাঁদপুর এর মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় তিনি দুই ধাপে ত্রাণ সামগ্ৰী বিতরণ করেছ্ন। উনার পক্ষ থেকে দেয়া ত্রাণ কে “প্রধানমন্ত্রীর উপহার” বলে বিতরণ করা হচ্ছে। প্রথম ধাপে ৫ হাজার পরিবারের মাঝে “প্রধানমন্ত্রীর উপহার” পৌঁছে দেয়া হয়। দ্বিতীয় ধাপে ১০ হাজার পরিবারের মাঝে “প্রধানমন্ত্রীর উপহার” বিতরণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।



শামীম ওসমান এমপি
নারায়ণগঞ্জের এমপি শামীম ওসমান। মহামারী করোনা সংকটের শুরু থেকে নিজ এলাকায় সাধারণ মানুষের সবচেয়ে কাছের বন্ধু হিসেবে আস্থা অর্জন করেছেন। শুরুতেই তিনি এলাকার দুর্গতদের ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন। এলাকায় যারা করোনা আক্রান্ত তাদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছেন। নারায়ণগঞ্জে নিজ উদ্যোগে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেছেন। এলাকায় যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে, তাদের দাফনসহ সব কিছু নিজে তদারকি করেছেন।
সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ
মহামারী করোনা ভাইরাসের দুর্যোগ মোকাবেলায় বরিশাল নগরীর প্রায় ৫০ হাজার কর্মহীন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের বাসায় খাবার পৌছে দিয়ে বিশাল জনগোষ্ঠির সেবক হিসেবে কাজ করে গরীবের মেয়র হিসেবে চিহিৃত হয়েছেন বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। যতদিন করোনা ভাইরাসের তান্ডব থাকবে ততদিন কর্মহীন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের বাসায় খাবার পৌছে দেয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।



তারুন্যের অহংকার যুবরত্ন সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এই মহামারিতে জনগনের সেবা করে গরীবের মেয়র হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন নগরীর সিংহভাগ খেটে খাওয়া মানুষ। কেবল খাদ্য সহায়তাই নয়, মেয়র তার নিজের বিসিসির সম্মানির প্রায় সাড়ে ৩৫ লাখ টাকা নগরবাসীর জন্য গঠিত ত্রান তহবিলে জমা দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে আস্থার স্থলে পরিনত হয়েছেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ।
বরিশালের নগরপিতা ও মহানগর আ’লীগের সাধারন সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল আ’লীগ নেতাকর্মীদের আস্থার ঠিকানা। তেমনি সাদিক আবদুল্লাহ শুধু একজন নেতা নয়, তিনি সত্যিকার অর্থে একজন চেইঞ্জ মেকার। একটি দেশের সার্বিক ও সুষম উন্নয়ন তখনই ঘটে যখন দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলের উন্নয়নে উদ্ভাবনী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়।
নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন
ভোলা- ৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন। বিতর্কিত হলেও মহামারী করোনা সংকটের সময় এলাকায় উপস্থিত থেকে জনগণের আস্থা অর্জন ও ত্রাণ সহায়তা দিয়ে এলাকায় অন্য আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছেন। ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রেখে তিনি তার নির্বাচনী এলাকার মানুষের দুঃখ দুর্দশায় কাছে ছিলেন।



মির্জা আজম
জামালপুরের মির্জা আজম এমপি। করোনা মোকাবিলায় নিজ এলাকার জনগণের বন্ধু হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছেন। বৈশ্বিক মহামারী করোনা সংকটের মুহূর্তে তিনি জনগণের অভাব অনটন, দুঃখ দুর্দশা লাঘবের জন্য জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তার নিজ এলাকার হতদরিদ্র মানুষ যেন ত্রাণ সহায়তা পায়, তা নিশ্চিত করার জন্য সব সময় এলাকায় ছিলেন। চিকিৎসা সেবাসহ সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন।



এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী
চট্টগ্রামের এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি। মহামারী করোনা মোকাবিলায় চট্টগ্রাম তথা রাউজানের অসহায় জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তিন কোটি টাকারও বেশি ত্রাণ তহবিল গঠন করে ৬৫ হাজার মানুষের নিকট খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন। ফোন কলের মাধ্যমে ১০ হাজার মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের নিকট খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। নিজ এলাকায় মোড়ে মোড়ে ১৫টি ভ্যানগাড়িতে ফ্রি মাছ ও শাকসবজি বিরতণ করেছেন। ১০০ জন ডাক্তার দিয়ে ফ্রি টেলি চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছেন।
সারা রমজান মাসে করোনার সম্মুখযোদ্ধা ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীসহ প্রতিদিন দুই হাজার মানুষকে সেহেরির খাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। তার নিজ নির্বাচনী এলাকা রাউজানের এক হাজার ৪০০ জন ইমাম-মুয়াজ্জিন, ৪০০ মন্দিরের পুরোহিত, ল্যাগোডার ২০০ ভিক্ষু এবং ২০০ প্রতিবন্ধীকে খাদ্যসামগ্রী উপহার দিয়েছেন। এমপিদের প্রথম তিনিই আট মাসের সম্মানির ১৫ লাখ টাকা ত্রাণ তহবিলে রাউজানের দুঃখী মানুষের নিকট বিলিয়ে দিয়েছেন।



শেখ সারহান নাসের তন্ময়
বাগেরহাটের শেখ সারহান নাসের তন্ময় এমপি। নিজ নির্বাচনী এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন। অন্যদিকে চিকিৎসাবঞ্চিত জনগণের পাশে থেকে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছেন। এলাকাবাসীর নিকট এসব উদ্যোগে তিনি ব্যাপকভাবে অভিনন্দিত ও প্রশংসিত হয়েছেন।



মাশরাফি বিন মুর্তজা
নড়াইলের তথা বাংলাদেশের প্রিয় মানুষ মাশরাফি বিন মুর্তজা এমপি। শুরু থেকেই করোনা মোকাবিলায় নড়াইলবাসীর কাছে ছিলেন এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি নড়াইলবাসীর জন্য ত্রাণ তৎপরতা চালিয়েছেন। তেমনিভাবে নড়াইলের জনগণকে সচেতন করা এবং অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসা সেবাও নিশ্চিত করেন।



নূর ই আলম চৌধুরী
মাদারীপুরের নূর ই আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী) এমপি। দেশের ক্রান্তিকালে মহামারি করোনা সংকটের সময় নিজ নির্বাচনী এলাকায় সার্বক্ষণিকভাবে এলাকাবাসীর পাসে ছিলেন। জনগণের সব ধরনের সমস্যা ও দুঃখ কষ্ট দূর করার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের দিকে না তাকিয়ে নিজ উদ্যোগে নিয়মিত অসহায় গরীব মানুষের নিকট ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন।



শেখ হেলাল উদ্দিন
বাগেরহাট -১ আসনের সাংসদ শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি। ভাইরাস মোকাবিলায় নিজ নির্বাচনী এলাকায় সার্বক্ষণিক উপস্থিত থেকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন। ফলে বাগেরহাট -১ সংসদীয় আসনে ত্রাণ নিয়ে কোনো সমস্যার অভিযোগ শুনা যায়নি। তিনি সব সময় অভাবগ্রস্ত নিরীহ মানুষের খাদ্য সংকট ও চিকিৎসা সেবাসহ নিজে তদারকি করেছেন।



শাহারিয়ার আলম এমপি
রাজশাহীর এমপি শাহারিয়ার আলম। তিনি নিজ নির্বাচনী এলাকায় সার্বক্ষণিক উপস্থিত থেকে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে ত্রাণ সামগ্রী জনগণের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন। এমনকি এলাকাবাসীর মধ্যে নগদ অর্থ সহায়তা ও দিয়েছেন। বিশেষ করে অসহায় গরীব মানুষের নিকট নিয়মিত খোঁজ খবর নিয়ে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে তার নির্বাচনী এলাকা রাজশাহীতে জনবন্ধু হিসেবে আলোচিত হয়েছেন।