মাঝের ছবির মানুষটার নাম রাহুল দুবে, ওয়াশিংটন ডিসি নিবাসী ভারতীয়-মার্কিনী। ইনি একটি অসমসাহসিক কান্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন…
বুধবার রাতে রাহুলদের আবাসনের কাছে বেশ কিছু নিরস্ত্র বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনকারীকে ঘিরে ফেলে মারমুখী পুলিশ। পুলিশের উদ্দেশ্য ছিল প্রথমে আন্দোলন কারীদের ঘিরে ফেলে এবং তারপর আবাসন চত্বরের বদ্ধ জায়গায় ঢুকিয়ে তাদের ওপর লাঠি অথবা গুলি চালানো। সেই মতন পুলিশ আন্দোলনকারীদের ঘেরাও করে, টিয়ার শেল ছুঁড়ে রাহুলদের আবাসন চত্বরে তাদের ঢুকিয়ে দিয়েছিল। এরপরই ঘটলো সেই কান্ডটা।
টিয়ার শেল বৃষ্টির মধ্যেই রাহুল তার বাড়ির দরজা খুলে ভিতরে ঢুকিয়ে নেন অবরুদ্ধ ৭০ জন আন্দোলনকারীকে। রাহুলের দেখাদেখি আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দারাও সাহস পেয়ে আশ্রয় দেন বাকি আন্দোলনকারীদের। এরপর টানা আট ঘন্টা পুলিশের হুমকি, দরজা ভাঙার চেষ্টা, আবাসন লক্ষ্য করে টিয়ার শেল ফায়ার উপেক্ষা করে রাহুলরা আন্দোলনকারীদের আগলে রাখেন। তাদের খাদ্য, পানীয়, ফার্স্ট এডের ব্যবস্থা করেন। সব মিলিয়ে প্রায় শ’খানেক আন্দোলনকারীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন তারা। আট ঘন্টা পর পুলিশ সরে গেলে আন্দোলনকারীদের নিরাপদে আবাসনের বাইরে চলে যেতেও সাহায্য করেন রাহুলরা।
তারপর ঘটনা জানাজানি হতে স্বাভাবিক ভাবেই মিডিয়ার আগমন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাহুল জানিয়েছেন তিনি চান তার ১৩ বছরের ছেলেও যেন বড় হয়ে এই আন্দোলনকারীদের মতনই হয়। এমন মানুষদের প্রয়োজন রয়েছে তার দেশের।
কয়েক মাস আগের এনআরসি সিএএ বিরোধী আন্দোলনের সাথে কী মিল না ঘটনাটার? শাহিনবাগ চত্বরে পুলিশ বা বিজেপির গুন্ডাদের হামলার সম্ভাবনা রুখতে ঠিক এভাবেই তো আন্দোলনকারীদের আগলে রেখেছিলেন এদেশের বেশ কিছু মানুষ। রাত জেগে পাহারা দিয়েছিলেন। অভুক্ত আন্দোলনকারীদের খাবার দিয়েছিলেন।
লিখেছেন- রাজ দীপ বিশ্বাস রুদ্র, কলকাতা