কিংবদন্তি সাংবাদিক বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সংগঠক কামাল লোহানী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। শনিবার (২০ জুন) সকালে মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
কামাল লোহানীর ছেলে সাগর লোহানী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ভোর সাড়ে ৬টায় বাবাকে লাইফ সাপোর্ট নেওয়া হয়। সোয়া ১০টায় লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। বাবার মাল্টিপাল অরগান অফ হয়ে গিয়েছিল। প্রেশার কমে গিয়েছিল, একেবারেই বাড়েনি। কিনডি ইনঅ্যাকটিভ হয়ে গিয়েছিল।’ সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়ে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে মায়ের কবরে তাকে সমাহিত করা হবে।
শুক্রবার সাগর লোহানী বলেন, ‘বর্তমানে তিনি গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন। কিছু শারীরিক জটিলতার কারণে বুধবার বাবাকে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেদিনই তার করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়া হয়। শুক্রবার পরীক্ষার রিপোর্টে পজিটিভ আসে। এরপর তাকে গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে নিয়ে আসি।’
সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া গ্রামের খান মনতলা গ্রামে জন্মগ্রহণকরেন সাংবাদিক কামাল লোহানী। তিনি সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিভিন্ন আন্দোলনে প্রথম সারিতে ছিলেন।
১৯৭১ সালে বাঙালির স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হলে কামাল লোহানী একজন শিল্পী, একজন সাংবাদিক ও একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে যুদ্ধে যোগ দেন। সে সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংবাদ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশ বেতারের পরিচালকের দায়িত্ব পান।
১৯৭৫ এর ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন কামাল লোহানী।
১৯৮১ সালে দৈনিক বার্তার সম্পাদকের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে নতুন উদ্যমে সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে সংগঠিত করার কাজ শুরু করেন। পরে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
তিনি দৈনিক মিল্লাত পত্রিকা দিয়ে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর আজাদ, সংবাদ, পূর্বদেশ, দৈনিক বার্তায় গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।