পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে দিন দিন করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের ‘প্রথম রেড জোন’ ঘোষণা করে কক্সবাজার পৌর এলাকায় দ্বিতীয়বারের মতো লকডাউন করা হয়েছে । গত ০৬ জুন থেকে এ লকডাউন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (০৯ জুন) শহরের প্রধান সড়ক লালদিঘীর পাড়, কলাতলীর মোড়ে সীমিত পরিসরে যানবাহন ও মানুষের চলাফেরা করতে দেখা যায় । তবে ফার্মেসি ও করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রমে নিয়োজিত যানবাহন ছাড়া যে কোন ধরণের পরিবহন, মার্কেট, দোকান ও বিপণী বিতান বন্ধ রাখার জন্য প্রশাসনের নির্দেশনা থাকলেও অনেকে তা মানছেন না। সীমিত আকারে শুরু হয়েছে যানবাহন ও যত্রতত্র মানুষের।
গত শনিবার রাতের প্রথম প্রহর ১২ টার পর থেকে পুরো কক্সবাজার পৌর এলাকায় শুরু হয়েছে এ লকডাউন। লকডাউনের এ ঘোষণা আগামী ২০ জুন রাত ১২ টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। এর প্রেক্ষিতে গত শনিবার থেকে কক্সবাজার পৌর এলাকায় ঔষুধের দোকান ছাড়া কাঁচা বাজার, মার্কেট, দোকান ও বিপণী বিতানসহ সকল প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সীমিত রয়েছে যানবাহন চলাচলও। চলাচল কমেছে মানুষের।
প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী, সপ্তাহের রোববার ও বৃহস্পতিবার মুদির দোকান ও কাঁচা বাজার স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। সেই সাথে সপ্তাহের এ ২ দিন খোলা থাকবে ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়া লকডাউনের এ সময়ে নিত্যপণ্য বহনকারি হালকা ও ভারী যানবাহন শুধুমাত্র রাত ৮ টা থেকে সকাল ৮ টা পর্যন্ত পৌর এলাকায় চলাচল করতে পারবে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও জরুরি সেবা প্রদানকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সীমিত আকারে খোলা রাখা যাবে। এছাড়া এম্বুলেন্স, রোগী পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারি ব্যক্তিগত গাড়ী, কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও জরুরি সেবা প্রদানকারি কর্তৃপক্ষের গাড়ী লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে।
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান সমূহের গাড়ী চলাচলেও জন্য প্রশাসনের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। এসবের পাশাপাশি গণপরিবহনের বাস টার্মিনাল পৌর এলাকার বাইরে সরিয়ে নেয়া এবং প্রকাশ্য স্থানে বা গণজমায়েত করে ত্রাণ, খাদ্য পন্য বা অন্যান্য পন্য বিতরণ না করতে প্রশাসনের বিধি-নিষেধ রয়েছে। গত শুক্রবার বিকালে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন এ সংক্রান্ত একটি জরুরী বিজ্ঞপ্তি জারি করেন এবং শনিবার রাতের প্রথম প্রহর ১২ টার থেকে ‘রেড জোন’ ঘোষনার মধ্য দিয়ে সমগ্র কক্সবাজার পৌর এলাকায় এ লকডাউন শুরু হয়েছে।
এর আগে গত ২৫ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত লকডাউন ছিল কক্সবাজারে। এরপর ৩১ মে থেকে লকডাউন উঠে গেলে সবধরণের যানবাহন চলাচল বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি দোকানপাট, মার্কেট ও সবধরণের ব্যবসা প্রতিষ্টান খোলা রাখায় জনসমাগম বেড়ে যায়। এর মধ্যে কক্সবাজার পৌর এলাকাসহ কক্সবাজার সদর উপজেলায় আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। এর প্রেক্ষিতে নতুন করে ১৫ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
এব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আশংকাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় কক্সবাজার পৌর এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। লকডাউনের নির্দেশনা মানা এবং লোকজনকে সচেতন করতে প্রশাসন নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। যে বা যারা নির্দেশনা অমান্য করবে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।