করোনা মহামারীতে অদৃশ্য ভাইরাসের কারনে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্তের পর থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সার্বিক উদ্দ্যোগ সারা দেশে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে।গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলার মেহেরপুর উপজেলায় এক ব্যক্তি করোনা শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু লাশ দাফনে কেউ এগিয়ে আসেনি তেমন কেউ, স্বজনরাও ভয়ে লাশের কাছে আসেনি। ঠিক তখনই চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: জানিফের মানবিক ডাকে ছুটে এসেছে ছাত্রলীগের একঁঝাক নেতাকর্মী।

মানবিকতার এই কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে তানজিল তন্ময় জনতারমুখ’কে বলেন, ‘গতকাল দুপুর ১২টায় জানতে পারি মেহেরপুরে এক ব্যক্তি করোনায় মারা গেছেন। ঠিক তখনই জানিফ ভাইয়ের মানবিক ডাকে সাড়া দিয়ে লাশ দাফন ও জানাজা করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করলাম। একটু ভয় লেগেছে প্রথম দিকে। যাই হউক বের হলাম আল্লাহর নামে আমরা ৫ জন। বেলা ১:৩০ মিনিটের দিকে মেহেরপুর সদর হাসপাতাল পৌছালাম। গিয়ে দেখি লাশের শুধু মাত্র একজন স্বজন এসেছেন আর কোন মানুষ নেই, নেই কোন কান্নাকাটি। অত:পর পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস পড়ে লাশের রুমে গেলাম বাইরে থেকে আটকানো ছিলো রুমটা।

করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করলো ছাত্রলীগ 1
চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী

তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল কতৃপক্ষ কেউ লাশের আশেপাশেও আসেননি। এমনকি লাশের ইউরিন লাইন, ক্যানোলা, অক্সিজেনের মাস্ক ও আমাদের খুলতে হয়েছে। ইউরিন লাইন কিভাবে খুলতে হয় জানিনা হাসপাতালের সবাই কে বলছি খুলে দেন তারা কেউ আসনি কিন্তু ৫ মিনিট পর একজন দূর থেকে শিখিয়ে দিলো তারপর আমরা খুললাম, লাশ যখন ট্রলিতে নিয়ে বাহির করলাম মনে হচ্ছিলো যেনো আমরা ডাকাত সবাই যে যেদিকে পারছে দৌড় দিচ্ছে এমনকি অন্য রোগী বেড থেকে দৌড়ে পালাচ্ছে। লাশ অ্যাম্বুলেন্সে তুলে পৌর কবরস্থানে নিয়ে গেলাম কিন্তু খাটিয়া পাইনি কাধে করেই তুললাম। অতঃপর আমাদের সাথে যেহুতু আলেম ছিলেন তারাই সব ইসলামি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। পিপিই পরে থাকা অনেক কষ্টে গরমে যখন ক্লান্ত হয়ে পানি খেতে চাইলে কেউ ভীত হয়ে পানি দিতেও কাছে আসেনি। আবার লাশ ধুয়ে যানাজা শেষে কবরে লাশ নামিয়ে মাটি দিয়ে এক সস্তির নিশ্বাস ফেলি।

এই বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকর মো: জানিফ আরো বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা চুয়াডাঙ্গা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই নানা ভাবে মানুষের পাশে ছিলাম। গতকাল মেহেরপুরর করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশ দাফনে কেউ এগিয়ে না আসলেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানবিক ডাকে ছুটে গিয়ে জানাজা ও লাশ দাফন করেছে। এই মহৎ কাজে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সার্বিক সহযোগীতায় ছিলেন তাকওয়া ফাউন্ডেশন। আমি তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আগামীতেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এভাবে মানবিক কাজে থাকবে।’