অস্কারজয়ী হলিউড অভিনেতা, সংগীতশিল্পী জ্যারেড লেটোর ভক্ত ছড়িয়ে আছে সারাবিশ্বে। তার এত ভক্তদের তালিকার মধ্যে আছেন বাংলাদেশের ছোট পর্দার অভিনেত্রী সাবিলা নূর। লেটোর ভক্তদের সাথে সময় কাটানোর জন্য ইন্সটাগ্রামে লাইভে আসেন। আর সে কারণেই সম্প্রতি এই অভিনেতার সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে লাইভ আড্ডার সুযোগটি আসে বাংলাদেশের ছোট পর্দার অভিনেত্রী সাবিলা নূরের।
লাইভের শুরুতে তাঁদের কথোপকথন এরকম:
লেটো: হাই, কেমন আছো?
সাবিলা: আমি ভালো আছি। আপনি?
লেটো: তুমি কোথায় থাকো?
সাবিলা: বাংলাদেশ। আপনি সম্ভবত এই দেশের নামও শোনেননি। ঠিক বলছি না?
লেটো: বাংলাদেশ! তুমি আমাকে এত বোকা ভাবছ! সবাই বাংলাদেশকে চেনে। এটা অনেক বড় একটা দেশ।
সাবিলা: না, অনেকে ভাবে এটা ভারতের একটা অংশ। অনেকেই চেনে না।
লেটো: সবাই চেনে। এটা তোমার সমস্যা,আমার না। আমি চিনি, আমি ভালোবাসি। সবাই বাংলাদেশকে ভালোবাসে।
সাবিলা: কিন্তু এটা মোটেই বড় দেশ না।
লেটো: অবশ্যই বড় দেশ। আয়ারল্যান্ড, ভুটান, বার্মা (মিয়ানমার) থেকে বড়। আমি জানি, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে অনেক মিল আছে। তোমরা ডাল খাও। নান খাও।
সাবিলা: হ্যাঁ, আমরা বলি ছোলা…
সাবিলা লেটোর বাংলাদেশ নিয়ে এমন সুন্দর উপস্থাপনায় কিছুটা থমকে যান। অথচ লেটোর মুখের কথাগুলো সাবিলার মুখের কথা হতে পারতো! এরপর এই পশ্চিমা তারকা সাবিলাকে ইন্সটাগ্রামের লাইভ থেকে বিদায় জানান।
ছবিঃ ইন্সটাগ্রাম লাইভে কথা বলছেন লেটো ও সাবিলা।
নিজের দেশ নিয়ে সাবিলার এমন ছোট করে উপস্থাপনা করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সাবিলাকে নিয়ে তুমুল সমালোচনা। অনেক নির্মাতা ও শিল্পী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকে মন্তব্য করেন, একজন তারকা নিজের দেশকে আরও দায়িত্বশীলভাবে উপস্থাপন করতে পারতেন।
সমস্ত সমালোচনার জবাব দিয়ে সাবিলা বলেন, ‘আমি খুব অবাক হয়ে লক্ষ্য করছি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের আচরণগুলো কতটা ভয়ংকর ও আক্রমণাত্মক হয়ে যাচ্ছে। পান থেকে চুন খসলেই এতই অসহনশীল হয়ে যাচ্ছি, যে কাউকে ভয়ংকর অপরাধীর তকমা দিয়ে দিচ্ছি। সাধারণ মানুষ ভাবে, আমরা সবাই (তারকারা) রোবটের মত নির্ভুল জীবনযাপন করি। সবাই এতই পারফেক্ট যে, কোনো মানবিক উচ্ছ্বাস প্রকাশেও আমরা দাঁড়ি কমা সেমিকোলন মেপে কথা বলি।’
সাবিলা নূর বলেন, আমি আমার বাংলাদেশকে একটু বেশিই ভালোবাসি। তা না হলে হয়তো আমেরিকাতেই থেকে যেতাম। এখানে ফিরে আসতাম না। নিজের দেশের প্রতি শ্রদ্ধা আছে বলেই বাংলাদেশের জন্য কাজ করি। আর বাংলাদেশ নিয়ে গর্ববোধ করি। বাংলাদেশেকে নিয়ে যেন বাইরের মানুষ যেন ভুল কিছু না জানে। পৃথিবীর সবাই যেন বাংলাদেশের সাফল্যকে জানে, সেটাই মনে প্রাণে চাই। ইচ্ছাকৃত কোন ভুল কথা অবশ্যই বলব না, এটুকু বোঝার জন্য অনেক বেশি শিক্ষিত হওয়ারও প্রয়োজন নেই, একটু সহজ স্বাভাবিক মানবিক উচ্ছ্বাস প্রকাশের দৃষ্টিকোণ দেখলেই বোঝার কথা। তবে এ জন্য ইচ্ছাকৃত ব্যক্তিগত আক্রমণ, গালিগালাজ আর হয়রানি করা কিন্তু অপরাধ।
উল্লেখ্য, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী লেটো ‘ডালাস বায়ার্স ক্লাব’ (২০১৩) সিনেমায় লিঙ্গ পরিবর্তনকারী নারীর চরিত্রে অভিনয় করে অস্কার পান। এছাড়াও তিনি পেয়েছেন গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার ও স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ডসহ অসংখ্য পুরস্কার।