ডেল্টা মেডিকেলের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার তীব্র শ্বাস কষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। ডেল্টায় মৃত্যু বরণ করা করোনা পেশেন্টকে ইমার্জেন্সিতে রিসিভ করেন তিনি। উনার বয়েস ৩৬-৪০ মত হবে। রিসিভ করেছেন কোন ধরণের পার্সোনাল প্রটেকশন ছাড়াই। এখন আইসিইউতে নেওয়া হচ্ছে। অবস্থা বিশেষ ভাল না। সবাই দোয়া করেন।

ইতালিতে ডাঃ মার্সেলো নাতালি ১৯ মার্চ সংবাদে লাইভে এসে বলেছিলেন PPE এর সাপ্লাই সংকটের কারণে শুধু হ্যান্ড স্যানিটাইজার আর N95 মাস্ক পরে চিকিৎসা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ক্যামেরার সামনে সেই মাস্ক আর স্যানিটাজার তুলে দেখাচ্ছিলেন।

গতকাল মারা গেছেন ডাঃ নাতালি, কোভিড পজিটিভ। ইতালি যে ভুল গুলো করে মাশুল দিচ্ছে, সেই একই ভুলের ওপর পায়ে পা মিলিয়ে আমরা হাঁটছি। পার্থক্য হচ্ছে ইতালির ডাক্তাররা যুদ্ধে ঢাল তলোয়ার (PPE) নিয়ে মাঠে নেমেছে শুরু থেকেই, PPE ক্রাইসিস হয়েছে কদিন হল। তাতেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২৬০০ এর বেশি চিকিৎসক।

আর আমরা যুদ্ধটা আগে শুরু করে দিয়েছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখনও বলছে – PPE আসছে। টোলারবাগ জামে মসজিদ কমটির সেক্রেটারি মোজাম্মেল হক মারা গেছেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে। তিনি ডেল্টারর সেই পেশেন্টের সাথে একসাথে নামাজ আদায় করতেন।

আর IEDCR এখনও বলছে আরো তথ্য উপাত্ত লাগবে, এখনই WHO কে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন কনফার্ম করা যাবে না। ডেথ চেইন যখন আরো একটু লম্বা হবে, যখন ভদ্র অভদ্র কোনভাবেই আর করোনা ডেথ লুকানো যাবে না তখন আমরা ডিক্লেয়ার করব। এবং এও বলব- আমাদের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন আরো আগে থেকেই শুরু হয়েছে যেটা আমরা বুঝতে পারিনি।

আর ডিজি মহোদয় স্টিল বলে যাচ্ছেন করোনায় মৃত্যু ঝুঁকি বলতে গেলে একেবারেই নেই। আর একজনের পার্সোনাল চিকিৎসক স্বনামধন্য মেডিসিন বিশেষজ্ঞও বলছেন এই রোগে মৃত্যুর হার একেবারেই কম, এত আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। অথচ এক ইতালিতে গতকালই শুধু মারা গেছে সাড়ে নয়শর বেশি মানুষ।

শুধু এটুক বলি, আজকে মার্চের ২৩ তারিখ। এপ্রিলের ২৩ তারিখে অনেকেই এই দুনিয়ায় থাকব না। হতে পারে সেটা আপনি কিংবা আমি! এই ক্রাইসিস মোমেন্টেও আপনাদের চাটতে বিবেকে লাগে না?

এতদিন আপনারা ন্যাশনাল ক্রাইসিসে ডাক্তারদের ঢাল তলোয়ারহীন ভাবে ফ্রন্ট লাইনে রেখে ডিজাস্টারে ম্যানেজ করিয়েছেন। অপ্রতুলতা নিয়েই আমরা লড়ে গেছি। জনগণকে দেখিয়েছেন ব্যর্থতাগুলো শুধুই ডাক্তারদের। জনগণ দেখেছে ডাক্তার রোগী রেফার করেছে, তারা দেখেছে ডাক্তার রোগী দেখতে অনীহা দেখিয়েছে, দেখেছে করোনার ভয়ে ‘বাহানা’ করছে ডাক্তাররা।

এবার ডাক্তারদের মরে প্রমাণ করার সময় এসেছে- আপনারা এতদিন নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ডাক্তার আর জনগণকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে সেইফ সাইডে খেলছেন। বাংলাদেশ এবার দেখবে আপনারা ফ্রন্ট লাইনের ডাক্তারদের ছাড়াই খেলবেন!

KEEP SOCIAL DISTANCING
STAY PANICKED, STAY HOME.

লিখেছেন- ডাঃ যুবায়ের আহমেদ