পরপর দুইদিন কোভিড-১৯ এর কোন রোগী সনাক্ত না হওয়া নিয়ে অতি চিন্তিত এবং অতি নিশ্চিন্ত দুপক্ষকেই সংযত আচরণ করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। এত উত্তেজনা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যারা স্পেনের উদাহরণ দিয়ে বলতে চাচ্ছেন যে ত্রুটিপূর্ণ কিটের জন্য রেজাল্ট নেগেটিভ আসছে, তাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, সেগুলো র্যাপিড টেস্ট কিট, পিসিআর কিট না। বাংলাদেশে কোন র্যাপিড টেস্ট করা হয় না, করার সম্ভাবনাও নাই, কারণ এগুলো এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত না। পিসিআর কিটেও সমস্যা থাকতে পারে, যেটা ধরতে পারার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু স্পেনের যে রেফারেন্স দিচ্ছেন, সেটা পিসিআর কিট না।
অন্যদিকে আইইডিসিআর এর উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা আপনাদের গাইডলাইন অনুযায়ী লক্ষণ থাক না থাক, কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করে হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় যারা যাদের সনাক্ত হয়েছে তাদের সংস্পর্শে আসা সব ডাক্তার, নার্স, টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ানসহ সব হেলথ ওয়ার্কারের টেস্ট করুন। হোম কোয়ারাইন্টাইন করা সবার টেস্ট করুন। সন্দেহভাজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে তাদের মৃতদেহ থেকে নমুনা নিয়ে টেস্ট করুন। সারা দেশের এটিপিক্যাল নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের টেস্ট করুন। বটম লাইন ইজ, “টেস্ট, টেস্ট এন্ড টেস্ট”। হটলাইনে প্র্যাংক কল আসবেই, সব দেশেই আসে। এটা মাথায় রেখেই অস্থায়ী ভিত্তিতে আরো ১০০ ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে আরো নম্বর চালু করুন। ১০ টা ভুয়া কলের মধ্যে ১টি কল জরুরি থাকতে পারে। তাকে কেন বঞ্চিত করবেন?
গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ, আপনারা “সনাক্ত” এবং “আক্রান্ত” শব্দ দুটোকে গুলিয়ে ফেলবেন না। আক্রান্ত হলো যত মানুষ কোভিড-১৯ রোগের ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছে। আর সনাক্ত হল, আক্রান্তদের মধ্যে যে কয়জনের পিসিআর টেস্ট করে পজিটিভ রেজাল্ট আসছে।
আর মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে করজোড়ে অনুরোধ, আপনি দয়া করে চুপ থাকুন। প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ।
লিখেছেন- ডা. জাহিদুর রহমান, ভাইরোলজিস্ট সহকারী অধ্যাপক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ।