আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত, অন্যদিকে বাংলাদেশ উঠেছে প্রথমবার ফাইনালে। সব মিলিয়ে ‘ফেভারিট’ তকমাটা ভারতের গায়েই লেগে ছিলো ম্যাচের শুরুতে, কিন্তু মাঠের শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে বিজয়ী বাংলাদেশ। এমন জয়ে বাঁধন ছাড়া উল্লাসে পাগল প্রায় খেলোয়াড়েরা। হারের হতাশা নিয়ে ভারতীয় দল মাঠ ছাড়ার সময় যোগ হয় বাড়তি উত্তেজনা। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায় বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে পতাকা কেড়ে নিচ্ছে, ভারতের কয়েকজন যুবা!
মাঠের স্লেজিং শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে ‘হাতাহাতি’তে। হাতাহাতির কিছুটা ধরার পর টিভি ক্যামেরা সরে যায় ভারতের ডাগআউটের দিকে, যেখানে দেখা গেল কোচিং স্টাফের সদস্যরা হাতের ইশারায় তাদের ক্রিকেটারদের চলে আসতে বলছেন। ম্যাচ জয়ের পর দৃশ্যটি নিয়ে আলোচনা না হলেও আজ সারাদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান মন্তব্যে ছড়িয়েছে৷ ভিডিওতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা হয়েছে বলে মন্তব্য করছেন অনেকেই।
এছাড়া ম্যাচের সময়কার একটি ভিডিও ক্লিপও অনেকে ‘শেয়ার’ করেছেন। যেখান বাংলাদেশের মিডল অর্ডার ধ্বসিয়ে দেয়া রাভি বিষ্ণুয়কে স্লেজিং অশ্রাব্য ভাষার (“আরে ভোসডিকে (বেশ্যার পোলা) ব্যাটসে খেললে”) ব্যবহার করতে শোনা যায়। ম্যাচ শেষে অবশ্য ভারতীয় অধিনায়ক দায় চাপিয়েছেন বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের উপর।



ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় অধিনায়ক প্রিয়ম গার্গ বললেন- ‘আমরা স্বাভাবিকই ছিলাম। আপনি কোনো দিন জিতবেন, কোনো দিন হারবেন- এটাই তো খেলার স্বাভাবিক নিয়ম। তবে ওঁদের প্রতিক্রিয়া কদর্য ছিল। এমনটা হওয়া উচিত ছিল না। যা–ই হোক, এটি বড় কিছু না।’
বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলী অবশ্য দায়টা নিজেদের উপর নিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। ঠান্ডা মাথায় ফাইনালের উত্তেজনার কথা তুলে আকবর বলেছেন-
‘যা হয়েছে তা দুঃখজনক, এটা হওয়া উচিত ছিল না। আমি জানি না ঠিক কী হয়েছে। আমি জিজ্ঞেসও করিনি কী হচ্ছে। তবে এ তো জানাই, ফাইনালে আবেগ- একটু বেশি থাকে। ছেলেরাও একটু বেশি উত্তেজিত থাকে, আবেগ ধরে রাখতে পারে না। তবে তরুণ খেলোয়াড় হিসেবে এমনটা হওয়া উচিত নয়। যেকোনো অবস্থায়, যেকোনো আচরণে আমাদের উচিত প্রতিপক্ষকে সম্মান দেখানো। খেলাটার প্রতিও শ্রদ্ধা থাকা দরকার। ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা হিসেবেই পরিচিত। তাই আমি বলছি, আমার দলের পক্ষ থেকেই বলছি, আমি দুঃখিত।’
তবে বিষয়টা যে দুই অধিনায়কের বক্তব্যে কিংবা তীর্যক মন্তব্যের উত্তেজনায় শেষ হচ্ছে না, ইএসপিএন ক্রিকইনফোর খবর জানাচ্ছে সে কথা। আইসিসিও নাক গলিয়েছে এখানে, তদন্ত করবেন ম্যাচ রেফারি। দোষী হলে জরিমানা থেকে ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা পর্যন্ত সাজা পেতে হবে।