টুর্নামেন্ট পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখা যাবে, আসরের সেরা পনেরো জন ব্যাটসম্যানের তালিকায় একজন কেবল বাংলাদেশের। সেও সবার শেষের জন, মাহমুদুল হাসান জয়। ৬ ম্যাচে ১৮৪ রান করেছেন, এর মধ্যে সেঞ্চুরি একটা। সেমিফাইনালে করা সে এক সেঞ্চুরিতেই দলকে ফাইনালে তুলেছেন। আসর সেরা বোলারের তালিকায় কেবল মাত্র দুইটা নাম বাংলাদেশের, সেও তলানিতে। পনেরো জনের তালিকায় ১২ উইকেট নিয়ে ছয়ে রকিবুল, শরীফুল তেরোতে ৯ উইকেট নিয়ে। অথচ পরিসংখ্যান কিংবা শক্তি, সব দিক দিয়েই এগিয়ে ছিলো এবং আছে ভারত, আসর সেরা বোলার-ব্যাটসম্যান দুটোই তাদের।
টুর্নামেন্ট সেরা বোলার-ব্যাটসম্যান না থেকেও যে দল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, তাদের শক্তির জায়গাটা অন্যকোথাও, অন্যকিছুতে। নিজের নামের পাশে ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’ লাগার আগের দিন আইসিসিকে দেয়া ইন্টারভিউতে নাবিল বলেছিলেন- “আমাদের দলের কেউই মনে করে না যে তারা এক্সট্রা অর্ডিনারি। এখানে সবার আলাদা আলাদা দায়িত্ব দেওয়া আছে। কেউ চায় না যে আমি হিরো হবো। সবাই জানে সবার ভূমিকা কী, আমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বগুলো ভাগ করে নিয়েছি।”
এরা চ্যাম্পিয়ন কারণ, দলের এগারো জন খেলে বুক চিতিয়ে। ফাইনালের মঞ্চে হুড়মুড় করে ভেঙ্গে যাওয়া মিডল অর্ডারের ধাক্কা সামলে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার মত একজন আকবর দ্যা গ্রেট আছেন। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার মত ব্যাথা পেয়েও দলের জন আবার মাঠে নেমে ব্যাথায় কুঁকড়ে গিয়েও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে দুই রান নেয়া ইমন আছেন। এ দলে খেলা এমন একজন আছেন- যিনি কিনা খেলাই শুরু করেছেন বাংলাদেশের হার দেখে। নিজেদের দেশকে হারতে দেখে কাঁদতে থাকা যে কিশোর ক্রিকেটার হয়েছে দেশবাসীকে হাসাবে বলে, সেই নাবিল কিংবা তার সঙ্গীরা অজেয় হবে নাতো হবে কে?



বাংলাদেশের নামের পাশে ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’ লেগে গেছে। এই ভাবতেই কেমন গলা ধরে যাচ্ছে, পত্রিকার শিরোনাম গুলো, আমাদের ছেলের উচ্ছ্বসিত ছবিগুলো হাজারবার দেখতে ইচ্ছে করছে। এমন জয়ের পর অঞ্জন দত্তের বিখ্যাত সেই গানের দুই লাইন কেবল কানে বাজছে- স্বপ্ন এবার হয়ে গেছে সত্যি…আহা, এতদিন ধরে এত অপেক্ষা!