তিনজন হুমাুয়ুন আছেন আমার জীবনে। আমাদের জীবনে। বাঙালির জীবনে। আমরা একজনের অভিনয় দেখে বড় হয়েছি, একজনের বই পড়ে, আরেকজন মুক্তভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে শিখিয়েছেন। তিনজনের মধ্যে একজন হুমায়ুন ফরিদী। বাংলাদেশের যে কয়জন অভিনেতাকে আমি প্রচণ্ড শ্রদ্ধা করি ফরীদি তাদের একজন। শৈশবে বিটিভিতে তাঁর অভিনয় দেখতাম মুগ্ধ হয়ে। তার দহন ছবিটা দেখে বিস্মিত হয়েছিলাম। একজন মানুষ কি করে এতো ভালো অভিনয় করেন!
হুমায়ুন ফরিদীর মেয়ে শারারাত আপা ব্র্যাকে কিছুদিন সহকর্মী ছিলেন। বাবার মতোই হাসিখুশি মানুষ। গত বছর গুণী এই অভিনেতা একুশে পুরস্কার পান। আফসোস বেঁচে থাকতে তাকে অামরা এ সম্মান দিতে পারিনি। অথচ বাংলা নাটক বা সিনেমার কথা বললে এই নামটি কখনো ভোলা যাবে না।
সাত বছর আগে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারির আজকের এই দিনে হুমাুয়ুন ফরিদী মারা যান। তাঁর মৃত্যু আমায় ভীষণ কষ্ট দিয়েছিল। কেবল কী হুমায়ুন ফরিদী? বাঙালির জীবনে আরও দুজন হুমায়ুন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন।
হুমায়ুন ফরিদী যে বছর মারা যান ওই বছরের ১৯ জুলাই ধরণী ছাড়েন জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ। বইমেলার এই মাসটা তাকে খুব মিস করি। আজও বইমেলা মানে তিনি। আরেক মেধাবী লেখক হুমায়ুন আজাদও নেই আজ ১৬ বছর। ১৬ বছর আগে এই ফেব্রুয়ারিতে তাঁর উপর হামলা হয়েছিল। তিনিও আমার স্মৃতিতে আছেন।
এই তিন হুমায়ুন কেবল যে আমার জীবনেই প্রভাব ফেলেছিলেন তাই নয়, বাংলাদেশের সৌভাগ্য যে এই তিন হুমায়ুন বাংলাদেশের তিনটা প্রজন্মকে গড়ে তুলতে সহায়তা করেছেন। আমরা একজনের অভিনয় দেখে বড় হয়েছি, একজনের বই পড়ে, আরেকজন মুক্তভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে শিখিয়েছেন।
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি হুমায়ুন ফরিদীর চলে যাওয়ার দিনে তিন হুমায়ুনের জন্য গভীর শ্রদ্ধা। পরপারে ভালো থাকুন আপনারা।
লিখেছেন- শরিফুল হাসান, ব্র্যাক কর্মকতা।