অস্ত্রের দামামা বাজছে এখন দেশে দেশে, নিজেদের সামরিক শক্তি বাড়াতে এই খাতে বাজেট বাড়াচ্ছে বড়বড় দেশগুলো। ইরান-আমেরিকা দ্বন্দ্বে আশংকা জাগছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের। পারমানবিক অস্রেও ইতিমধ্যেই সুসজ্জিত হয়েছে বহু দেশ। নিজেদের আকাশকে শত্রুর আক্রমণ থেকে মুক্ত রাখতে সামরিক বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে, উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। এস-৪০০ হলো রাশিয়ার তৈরি অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, যাকে বর্তমান দুনিয়ার সবথেকে আধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মানা হয়।
এই সিস্টেমে ৪ টাইপের মিসাইল ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে, যা কিনা ৪০ কি.মি. থেকে ৪০০ কি.মি. পর্যন্ত হয়। সব থেকে অদ্ভুত ব্যপার হচ্ছে এস-৪০০ মিসাইলের গতি ঘন্টায় ১৭০০০ কিলোমিটার। যা কিনা mach 13, অর্থাৎ শব্দের গতি থেকে ১৩ গুন বেশি।
এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের সব থেকে আধুনিক হচ্ছে তার রাডার সিস্টেম, যা কিনা ৬০০ কি:মি মধ্যে ৩০০ টার্গেটকে এক সাথে খুঁজে বের করতে সক্ষম। এবং এর এল্টিটিউড রেঞ্জ (মাটি থেকে উপরে) ১০০-৪০০০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। জ্বি পাঠক ঠিকই পড়ছেন, এই রেঞ্জের ভিতরে ঢুকে পড়া শত্রুপক্ষের যে কোনো এয়ারক্রাফট, মিসাইল কিংবা ড্রোনকে আকাশেই ধ্বংস করার সক্ষমতা আছে এস-৪০০।



এই এয়ার ডিফেন্সের ডিজাইন করেছে-Almaz-Antey Arms industry company। আর ম্যানুফ্যাকচারার করেছে- Fakel Machine-Building Design Bureau নামের একটি রাশিয়ান অস্র তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান।
তবে এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরির পেছনে রয়েছে এক লম্বা ইতিহাস। সালটা তখন ১৯৪৭ সাল, আমেরিকা বনাম সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমানের রাশিয়া) ‘কোল্ড ওয়ার’ চলছে। রাশিয়া চিন্তা করে, খুব দ্রুতই আমেরিকার মতো তারা মিসাইল সিস্টেমে উন্নতি করতে পারবে না। তাই আমেরিকার মিসাইল ঠেকাতে দরকার- উন্নত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, যার সক্ষমতা ইতিমধ্যেই অর্জন করেছে বর্তমান রাশিয়া। রাশিয়ার প্রথম এস সিরিজের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম,এস-২০০। যা প্রথম সার্ভিসে আসে ১৯৬৭ সালে। এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের দ্বিতীয় সংস্করণ এস-৩০০, যেটি সার্ভিসে আসে ১৯৭৮ সালে। এর সবশেষ সংযোজন হিসেবে এস-৪০০ রাশিয়ান এয়ার ফোর্সে যুক্ত হয় ২০০৭ সালে।
রাশিয়া, চীন, তুর্কি- এখন পর্যন্ত নিজেদের আকাশকে শত্রুমুক্ত রাখার সবচেয়ে শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এস-৪০০ আছে কেবল এই তিন দেশের। তবে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের এয়ার ফোর্সে ২০২৪ এর মধ্যে এস-৪০০ যুক্ত হতে যাচ্ছে।